Hire the best Logo Mockup professionals... Hire Freelancers Buy Now!

গেম অফ থ্রোনসের পূর্বকথা

গেম অফ থ্রোনসের পূর্বকথা
গেম অফ থ্রোনসের পূর্বকথা

টিভি সিরিজের নাম গেম অফ থ্রোন্স সংক্ষেপে গট হলেও মূল রাইটার জর্জ মার্টিনের A Song of Ice and Fire নামে এ মহাকাব্যে রয়েছে ৮ টি বই, এবং আরো আসবে😶।তারই অংশবিশেষ নিয়ে তৈরি হয়েছে গট।তবে আমরা টিভি সিরিজের সাথে রিলেটেড কাহিনীগুলোই উল্লেখ করবো।তো চলুন সেই মহাকাব্যের চুম্বক অংশে চোখ বুলিয়ে আসি

    ❄️ 🔥  A Song of Ice and 🔥❄️

প্লটকে ছোট কিন্তু ডিটেইলসে বলার জন্য আমরা গটকে প্রথমেই তিনটি ভাগে ভাগ করবো।
১▪️হাজার হাজার বছর আগের ইতিহাস।
২▪️ তিনশ' বছর আগের ইতিহাস।
৩▪️১৭ বছর পূর্বের ইতিহাস।

▪️▪️▪️হাজার বছর আগের ইতিহাসঃ--প্রথমেই গটের মানচিত্র সম্পর্কে ধারনা দেয়া যাক।এটা খুবই জরুরি গল্পটা বোঝার জন্য।ওয়েস্টেরস একটি পুরোনো জনপদ। এটা আকৃতির দিক দিয়ে মোটামুটি একটা মহাদেশের সমান। ন্যারো সি এর অপর পাশে এটি অবস্থিত।এখানকার আবহাওয়া ধরন কিছুটা ভিন্ন। এখানে যখন শীতকাল আসে, তখন সেটা থাকে কয়েক বছর। আবার গ্রীষ্মকালও থাকে কয়েক বছর।

এবার রাজ্যগুলোর অবস্থান বলে নেয়া যাক।মহাদেশের একদম উত্তরের রাজ্য হচ্ছে উইন্টারফেল।এখানে সবসময় তুষারপাত হয়। মহাদেশের সর্বদক্ষিণের রাজ্য ডোর্ন।এটা বিস্তীর্ণ মরুভূমি। ওয়েস্টেরসে বসবাস করে চিলড্রেন অফ ফরেস্ট। এরা মানুষ না,তবে মানুষের কাছাকাছি একটা প্রজাতি।তারা পুরোনো ঈশ্বর তথা ওল্ড গডসে বিশ্বাস করে। উল্লেখ্য টিভি সিরিজে ওল্ড গডস আর নিউ গডস নিয়ে তেযন কোনো বিবাদ না দেখা গেলেও বইয়ে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।চিলড্রেন অফ ফরেষ্টদের মূল শক্তি হচ্ছে জাদুবিদ্যা।

মানুষদের আগমন+সংঘাতের সূচনাঃ--আজ থেকে প্রায় ১২ হাজার বছর আগে প্রথমবারের মতো ন্যারো সি পারি দিয়ে এখানে মানুষেরা আসে। তাই তাদেরকে বলা হয় ফার্স্ট ম্যান। তাদের সাথে শুরু হয় চিলড্রেন অফ ফরেষ্টদের বিরোধ ও সংঘাত। মানুষের ছিল চৌকশ সামরিক কৌশল। বিপরীতে চিলড্রেন অফ ফরেষ্টদের ছিল জাদুবিদ্যা। এভাবে কেটে যায় ৪ হাজার বছর।চিলড্রেন অফ ফরেষ্টরা একধরনের গাছকে উপাসনা করতো, মূলত তাদের গডসদের শক্তি নির্ভর করতো এগুলোর উপরে।মানুষের হাত থেকে তাদের গডসদের রক্ষার জন্য ড্রাগনগ্লাসের(একধরনের চাকু) মাধ্যমে জাদুর সাহায্যে একজন মানুষকে হোয়াইট ওয়াকার বানিয়ে দেয়।তাদের উদ্দেশ্য ছিল যে হোয়াইট ওয়াকাররা তাদের হয়ে মানুষের বিপক্ষে লড়বে। কিন্তু হোয়াইট ওয়াকাররা নির্বিচারে মানুষ+চিলড্রেন অফ ফরেষ্ট উভয়কেই নির্মূল করতে থাকে🙂।এরকম সময় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়ানক ও সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ঠাণ্ডা পড়ে ওয়েস্টেরসে। কয়েকবছর ধরে স্থায়ী সেই তীব্র শীতে মানুষ ও চিলড্রেন অফ ফরেষ্টরা ভয়ংকর সংকটে পড়ে,সাথে হোয়াইট ওয়াকারদের আক্রমণ তো আছেই। তখন মানুষ ও চিলড্রেন অফ ফরেষ্টরা সম্মিলিত ভাবে সামরিক কৌশল ও জাদুবিদ্যা প্রয়োগ করে হোয়াইট ওয়াকারদের উৎখাত করে উত্তরে পাঠিয়ে দেয়। এবং সেই থেকেই শীতকাল ওয়েস্টেরসে একটা আতঙ্কের নাম। শীতকাল মানেই হোয়াইট ওয়াকারদের আক্রমণ। কিন্তু না, এরপর আর কখনোই সেরকম ঠাণ্ডাও পড়েনি, হোয়াইট ওয়াকারদেরও আর দেখা যায় নি। একজন মানুষ চিলড্রেন অফ ফরেষ্টদের জাদুর সাহায্যে উত্তরে একটা বিশাল দেয়াল তৈরি করে। যাতে পরবর্তীতে হোয়াইট ওয়াকাররা ফিরে এলেও বাধার সম্মুখীন হয়।এরপর আস্তে আস্তে চিলড্রেন অফ ফরেস্ট বিলুপ্ত হয়ে যায়।

দ্বিতীয় মানবজাতির আগমনঃ--এরপর ওয়েস্টেরসে আসে আরেকদল মানুষ। তাদেরকে বলা হয় অ্যান্ডাল। তারা ওয়েস্টেরসে প্রথম ইস্পাতের ব্যবহার ও নতুন ধর্ম (নিউ গডস) প্রচলন করে। স্বভাবতই ফার্স্টম্যান দের তুলনায় এ্যান্ডালরা যুদ্ধবিদ্যায় ছিল পারদর্শী।ফলে ওয়েস্টরসে এ্যান্ডালরাই কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠে। ফার্স্ট ম্যান ও অ্যান্ডালদের বংশধররা ওয়েস্টেরসে ৭টা রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এজন্য ওয়েস্টেরসকে সেভেন কিংডমসও বলা হয়। মূলত অ্যান্ডালরাই পরবর্তীতে ওয়েস্টেরসে সবচেয়ে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ফার্স্টম্যানদের বংশধররা শুধু উইন্টারফেলে রাজত্ব করতে থাকে। অ্যান্ডালরা উত্তরের হিমশীতল উইন্টারফেলও জয় করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা বুঝতে পেরেছিল ফার্স্টম্যানদের উত্তরসূরী ছাড়া কেউ ঐ ঠান্ডার নরক কব্জায় রাখতে পারবে না।ফার্স্টম্যানদের বংশধররা তাদেরকে সবসময় সতর্ক করে দেয় “Winter Is Coming". যখন সেই দীর্ঘ শীতকাল আসবে, তাদের নতুন ঈশ্বরেরা কখনোই পারবে না হোয়াইট ওয়াকারদের সামনে দাড়াতে। আর এখন যেহেতু চিলড্রেন অফ ফরেষ্ট এবং তাদের জাদুবিদ্যাও নেই তাই হোয়াইট ওয়াকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে কেবলই ফার্স্টম্যানদের বংশধর ও তাদের ওল্ড গডস।
(যদিও কালের বিবর্তনে এখন উইন্টারফেলেরই অনেক মানুষ বিশ্বাস করে এসব জাদুবিদ্যা আর হোয়াইট ওয়াকারদের গালগপ্প শুধুই গুজব। আর অন্যান্য রাজত্বের কথা তো বলারই দরকার নাই।ইতিহাসের প্রারম্ভিক মোটামুটি এখানেই শেষ। এভাবেই চলে গেল হাজার হাজার বছর।

▪️▪️▪️ ইতিহাসের দ্বিতীয় পর্যায় তথা ৩০০ বছর আগের কাহিনীঃ--টারগেরিয়ান বংশের এগোন টারগেরইয়ান ও তার দুই বোন তিনটি ড্রাগনের পিঠে চরে ওয়েস্টেরস আক্রমণ করে (কাহিনী সংক্ষেপনে কিছুটা স্কিপ করে গেলাম,,আর টিভি সিরিজের জন্য এটা জরুরিও না) টারগারইয়ানদের সৈন্য সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও যুদ্ধে ওয়েস্টেরসের রাজ্যগুলো পরাজিত হয়, কেননা তারা তাদের দুর্গগুলো তৈরি করেছিল মানুষের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য, ড্রাগনদের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য নয়।তাই যখন উপর থেকে যখন ড্রাগনগুলো অগ্নিবর্ষণ শুরু করলো,তারা পুরে ছাই হবার আগ পর্যন্ত শুধু অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে। টারগেরিয়ান রাজা যেখানে অবতরন করে তার সম্মানে সেই জায়গাকে বলা হয় কিংস ল্যান্ডিং। সেটাকে রাজধানী বানিয়ে তারা ওয়েস্টেরস শাসন করা শুরু করে। ড্রাগনদের  দাপটের কারনে ফার্স্টম্যানদের মত দুর্ধর্ষ জাতিও প্রথমবারের মতো দক্ষিণের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে।টারগেরিয়ান রাজা পরাজিত সৈন্যদের তরবারি ড্রাগনের আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করে আয়রন থ্রোন🐉🐉।
টারগেরিয়ানদের রক্তকে বলা হয় ড্রাগনব্লাড,কারন আগুনে তাদের কোন ক্ষতি হত না। নিজেদের রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতে তারা ভাই বোন দের মধ্যে বিয়ে করতো😶।এরকম অজাচারের (incest) কারনে বেশিরভাগ টারগেরিয়ানদের পাগলামির লক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য কারো কারো মধ্যে অবশ্য সত্যি সত্যিই ড্রাগনের শৌর্য বীর্য দেখা যেত(লাইক মাদার অফ ড্রাগন 😍)

টারগেরিয়ান বংশেরই একজন কিং ড্রাগনগুলোকে বন্দি করে রাখে।ফলে ড্রাগনগুলোর সাইজ ছোট হতে হতে ছাগলের সাইজে চলে আসে।আবার নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলেই তারা ড্রাগন নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তো,ফলে ড্রাগনগুলোও একে একে মরে যেতে লাগলো। ক্রমান্বয়ে সবগুলো ড্রাগন মারা যায়। ইতিহাসের দ্বিতীয় পর্যায়টা এখানেই শেষ।

▪️▪️▪️১৭ বছর পূর্বে শুরু হওয়া ইতিহাসের শেষ বা বর্তমান পর্যায়ের সূচনাঃ--প্রায় ১৭ বছর আগে যেই টারগেরিয়ান রাজা তার পাগলামি ছিল আর যে কোন টারগেরিয়ানের থেকে অনেক বেশি। তাকে বলা হত ম্যাড কিং। আগেই বলেছি রক্তের ইনসেস্টের জন্য তাদের স্বভাবে পাগলামি ছিল। সে যখন যাকে ইচ্ছা পুড়িয়ে মারত। তার সবথেকে পছন্দের বাক্য ছিল Burn Them All 🔥🔥।তার বড় ছেলে রেগার উইন্টারফেলের তৎকালীন লর্ড স্টার্কের একমাত্র মেয়ে লিয়েনাকে অপহরণ করে (যদিও গটে আমরা জানতে পারি লিয়েনাকে মূলত অপহরণ নয় বরং ভালোবেসে লিয়েনার অনুমতিতেই তাকে বিয়ে করেছিল রেগার,, কিন্তু স্টার্ক ফ্যামিলি তা জানতো না) প্রতিবাদ করতে রাজধানীতে যায় লর্ড স্টার্ক ও তার বড় ছেলে ব্র্যান্ডন স্টার্ক। দরবারে সকল লোকের সামনেই তাদের পুড়িয়ে মারে এরিস টারগেরইয়ান।
এদিকে পরিবার থেকে লিয়েনার সাথে যার বিয়ে ঠিক করেছিল সে ছিল স্টর্মস এন্ডের রবার্ট বারাথিওন। রবার্ট ও লর্ড স্টার্কের দ্বিতীয় ছেলে এডার্ড নেড স্টার্ক দুজনে ম্যাড কিং এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। রবার্ট এবং নেড স্টার্ক উভয়েই ছিল অসাধারণ যোদ্ধা। আশীর্বাদ হিসেবে ম্যাড কিং এরিসের লর্ড অ্যারিনও রবার্ট ও নেড স্টার্কের সাথে যুক্ত হয় নির্দেশ দেয়। অবশেষে একটানা ৩০০ বছর রাজত্ব করা টারগেরিয়ান বংশ পরাজিত হয়। রাজধানীর বাইরে থাকায় বেঁচে যায় এরিসের শিশুপুত্র ভিসেরিস ও তার ছোট বোন ডেনেরিস। রবার্ট আয়রন থ্রোনে আরোহণ করে।লর্ড আরিনের পরামর্শে রাজত্বের ভিত মজবুত করতে সেভেন কিংডমের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি টাইউইন ল্যানিস্টারের একমাত্র মেয়ে সার্সী ল্যানিষ্টারকে বিয়ে করে রবার্ট। অ্যারিনকে নিজের হ্যান্ড অফ কিং বানায় রবার্ট।এবং তার বন্ধু নেড স্টার্ককে  ওয়ার্ডেন অফ নর্থ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।তার রাজত্বের ১৭ বছর পর হ্যান্ড অফ কিং লর্ড অ্যারিন মারা যায়। এখান থেকে টিভি সিরিজ হিসেবে “গেম অফ থ্রোনস"এর মহাযাত্রা শুরু হয়

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আগেই বলেছি গটের বইগুলো ভালো করে পড়া হয়নি, সবগুলো বই আমার সংগ্রহে নেইও। তাছাড়া এতবড় পোস্টে ভুলত্রুটি বা তথ্যগত ভুল থাকবেই।আশা করি কমেন্টবক্সে সেগুলো ধরিয়ে দিবেন এবং ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

ভালার মরগুলিস♥️✌️

About the Author

Hey there! I'm Farhan, a Web Designer, Graphic Designer as well as a Content Creator. I love to Redesign and create interesting things.

Post a Comment